স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকদের উদ্ভাবন : ৫ : আজিজের সার ব্যবহার ফর্মুলা
এমরানা আহমেদ
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শালিয়াবহ গ্রামের আবদুল আজিজ। প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে তিনি পানিতে গুলিয়ে ইউরিয়া স্প্রে করে থাকেন। প্রচলিত ফর্মুলায় মাটিতে ইউরিয়া ছিটানো হয়। উদ্ভিদের শেকড় এই ইউরিয়া থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে। অন্যদিকে আজিজের ফর্মুলা মোতাবেক উদ্ভিদের পাতায় পানিতে গোলানো ইউরিয়া স্প্রে করা হয়। পাতার অসংখ্য ছিদ্রের মাধ্যমে উদ্ভিদ এই ইউরিয়া থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে। তার উদ্ভাবিত ইউরিয়া সার ব্যবহারের নতুন ফর্মুলা রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছে। আবদুল আজিজ জানান, গত ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন ফল-ফলাদির গাছে পানিতে গোলানো ইউরিয়া মিশিয়ে স্প্রে করে আসছেন। প্রচলিত ফর্মুলায় ৬০ শতাংশ আনারসের জমিতে যেখানে প্রয়োজন ৬ হাজার কেজি ইউরিয়া, সেখানে তার ফর্মুলায় ৬০ কেজিতেই মিটে যাচ্ছে। এভাবে উচ্চ ফলনশীল জাতের কুলের ক্ষেত্রে এক একর জমিতে যেখানে প্রায় ২০০০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হয়, সেখানে এ পদ্ধতিতে মাত্র ২০ কেজি ইউরিয়া ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। একই প্রক্রিয়ায় ধানে ইউরিয়া স্প্রে করেও তিনি সফলতা পেয়েছেন। এক্ষেত্রে ২০ শতাংশ জমিতে তিন দফায় ৭৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করছেন। অর্থাত্ বিঘাপ্রতি ইউরিয়ার প্রয়োজন হচ্ছে মাত্র ১ কেজির কিছু বেশি। অথচ প্রচলিত পদ্ধতিতে কৃষক ১ বিঘা বোরো ধানের জমিতে ৪৫ থেকে ৫০ কেজি ইউরিয়া ছিটিয়ে থাকে। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক কৃষক ফল গাছের পাশাপাশি ধান ক্ষেতেও ইউরিয়া স্প্রে করে প্রয়োগ করা শুরু করেছে। এভাবে আজিজের হাত ধরে এ পদ্ধতি ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। আব্দুল আজিজের অনুরোধে ব্রি’র গবেষণা প্লটে পরীক্ষামূলক গবেষণা করা হয়। সেখানেও ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। তিনি বোরো মৌসুমে কয়েকটি এলাকায় কৃষক পর্যায়ে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ধান আবাদের উদ্যোগ নেয়। এক্ষেত্রে ফলাফল ইতিবাচক।
No comments:
Post a Comment