Search This Blog

TIP'S CETAGORY WITH LANGUAGE

Tips 4 pc

Update Software

Friday, June 11, 2010

জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির দ্বারে রাইহান

জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির দ্বারে রাইহান

এমরানা আহমেদ
জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী রাইহান উদ্দিন আহমেদ। তিনি তার সূত্রের একটি গাণিতিক ভিত্তি দাঁড় করিয়েছেন, যা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাস্তবসম্মত বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
রাইহান আহমেদের জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন মূলত দুটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত।
একটি অংশ অরবিটকে, যা কক্ষপথের সঙ্গে এবং অপর অংশ ক্যারিয়েজকে, যা অক্ষের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ১৬টি শ্যাফট একটার ওপর একটা নির্দিষ্ট মাপে সাজিয়ে গঠন করা হয়েছে ক্যারিয়েজ। ১৩টি গোলাকার ফিক্সচার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে অরবিট। যন্ত্রে মোট দুটি অরবিটকে একটির ওপর আরেকটি সেট করা হয়েছে। প্রতিটি অরবিটের চার পাশে চারটি ক্যারিয়েজ স্থাপন করা হয়েছে। নিজস্ব ভর থেকে ঘুরে শক্তি উত্পাদন করবে ক্যারিয়েজ। ক্যারিয়েজের শক্তি ঘোরাবে অরবিটকে। পরে অরবিটের শক্তিকে বলবৃদ্ধি নীতি প্রয়োগ করে বাড়ানো হয়। এভাবে উত্পন্ন শক্তিতেই চলবে ইঞ্জিন। রাইহান আহমেদ জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির সূত্রের যে গাণিতিক ভিত্তি দাঁড় করিয়েছেন তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ প্যাটেম্লট অফিস। অনেক যাচাই-বাছাই করে ঢাকা প্যাটেম্লট অফিস ২০০১ সালে এ প্রযুক্তিকে প্যাটেম্লট করাতে রাজি হয়। ২০০২ সালে এ প্যাটেম্লট গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির পক্ষ থেকে রাইহান আহমেদের জ্বালানিবহীন ইঞ্জিন তৈরির সূত্র ও তার গাণিত্যিক ভিত্তিকে বাস্তবসম্মত বলে মত দেয়া হয়। প্যাটেন্টের নিয়মানুসারে এ প্রযুক্তি ২০০২ সালে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। গত আট বছরে বিশ্বের কোনো বিজ্ঞানী এ ধরনের ইঞ্জিন তৈরির সম্ভাব্যতা ও সূত্রের গাণিত্যিক ভিত্তি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেননি।
১৯৮৩ সালে জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির চিন্তা মাথায় আসে রাইহান আহমেদের। তিনি প্রথমে জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির একটি সূত্র তৈরি ও তার গাণিতিক ভিত্তি দাঁড় করালেন। সূত্রটি হচ্ছে, ‘প্রত্যেক বস্তুর ওজন তার একটি নিজস্ব শক্তি, যা ব্যবহার করে বস্তুটিকে গতিশীল করা যায়।’ তিনি তার সূত্রের নামকরণ করলেন ‘ল অব পার্টিকুলার মেথড’।
ইঞ্জিন তৈরির কাজ শুরু করতেই প্রয়োজন পড়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের। গবেষণার প্রয়োজনে একে একে বিক্রি করে দেয়া হলো বেশিরভাগ জমাজমি। কিছু পার্টস তৈরি করতে বেশ কয়েকবার যেতে হয়েছিল ভারতের ওয়ার্কশপে। গবেষণার কাজ এগিয়ে নিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার বন্ধু আবু হানিফ। প্রযুক্তিটি জানাজানি হওয়ায় পাচার বন্ধ করতে সূত্র ও সূত্রের গাণিতিক ভিত্তি ২০০১ সালে ঢাকা প্যাটেম্লট অফিস থেকে প্যাটেম্লট করিয়ে নেয়া হয়।
রাইহান আহমেদ এ গবেষণার পেছনে তার প্রায় সব সম্পদ ব্যয় করেছেন।
সূত্র ও গাণিতিক ভিত্তি অনুসরণ করে তিনি একটি জ্বালানিবহীন ইঞ্জিন তৈরির কাজও অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। তবে তার এই যন্ত্রের চূড়ান্ত রূপ দিতে এখন প্রয়োজন ন্যানো টেকনোলজির কম্পিউটারচালিত যন্ত্রপাতি এবং বিপুল অর্থের। এ দুটির কোনোটিই না থাকায় তার এ গবেষণাকর্ম এখন থেমে আছে।
রাইহান আহমেদ জানান, আমার বয়স হয়েছে। আমি চাই একদল তরুণ গবেষক এ গবেষণায় অংশ নিক। ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ তৈরি করতে ন্যানো টেকনোলজির কম্পিউটারচালিত যন্ত্রের প্রয়োজন। অংশগুলোর মাপ সূক্ষ্মতম পরিমাণ কমবেশি হলে ইঞ্জিন কাজ করবে না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাই কেবল পারে এ গবেষণাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। এ গবেষণা থেকে আমি কোনো আর্থিক লাভ চাই না। আমি চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরি সম্ভব হলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের একটি বিস্ময় এবং প্রযুক্তিটির রয়্যালটি বাবত দেশ যা আয় করবে তাতে সমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন এই উদ্ভাবক।

No comments:

Post a Comment

Tips Of All Sorts