চালু হলো আইপি টেলিফোনি
বর্তমান বিশ্বে টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় প্রযুক্তি হচ্ছে আইপি টেলিফোনি। গত বছর আমাদের দেশে আইপি টেলিফোনি উন্মুক্ত হলেও নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে, চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে সম্প্রতি তা চালু হলো। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) উদ্যোগে আইপি টেলিফোনি চালুর মাধ্যমে বলা যায়, দেশে একটি শুভ সূচনা হলো। এর সাথে টেলিকম সেবায় উন্মোচিত হলো এক নতুন দিগন্ত। কিন্তু কী এই আইপি টেলিফোনি?
এ নিয়ে লিখেছেন— সাদ আবদুল ওয়ালী
কি এই আইপি টেলিফোনি?
ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিফোনি সংক্ষেপে আইপি টেলিফোনি নামেই পরিচিত। টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে আইপি টেলিফোনি ইন্টারনেট প্রটোকল নির্ভর এমন এক ফোন সার্ভিস যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অত্যন্ত স্বল্প খরচে কথা বলার সেবা দিতে সক্ষম। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের মাধ্যমে এ সার্ভিস চালু হতে যাচ্ছে। এতে প্রত্যেক সার্ভিস প্রোভাইডার বা অপারেটরের একটি নিজস্ব কোড নম্বর থাকবে। এ সার্ভিস পেতে হলে একটি মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ থাকা বাধ্যতামূলক।
যেসব আইএসপি প্রতিষ্ঠান আইপি
টেলিফোনি সেবা দিচ্ছে
সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোক্তাদের দ্বারা এ সেবা শুরু হচ্ছে এটা খুবই আশার কথা। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার বা আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো আইপি টেলিফোনি সেবা প্রদান করতে যাচ্ছে। এ যাত্রায় সামিল হয়েছে মোট ১৮টি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে অ্যাডভান্সড ডেটা নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড, অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড, বিডিকম অনলাইন লিমিটেড, বেক্সিমকো, ব্রাকনেট, বিটিএস কমিউনিকেশনস লিমিটেড, কানেক্ট বিডি লিমিটেড, ঢাকা কম লিমিটেড, গ্রামীণ সাইবারনেট লিমিটেড, গ্লোবাল এক্সেস লিমিটেড, এইচআরসি টেকনোলজিস লিমিটেড, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ইননোভেটিভ অনলাইন লিমিটেড, লিংক থ্রি টেকনোলজিস লিমিটেড, মেট্রোনেট বিডি লিমিটেড, অপটিমাক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড, রয়াল গ্রিন অনলাইন লিমিটেড এবং টেলনেট কমিউনিকেশন লিমিটেড। উল্লেখ্য, গত বছর বিটিআরসি ৩২ টি আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে এ সেবার জন্য অনুমতি দেয়। কিন্তু নানা কারণে এ সেবা এতদিনে চালু হয়নি। ১৮টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি ১৪টি প্রতিষ্ঠান অচিরেই এ কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানা গেছে।
আইপি টেলিফোনিতে যা যা লাগবে
এই প্রথম অনেকগুলো আইএসপি প্রতিষ্ঠান একইসঙ্গে আইপি টেলিফোনি সেবা প্রদান করছে। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইপি টেলিফোনি কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে যেসব উপকরণ লাগবে তা হচ্ছে একটি আইপি টেলিফোন সেট— বাজারে এ ধরনের সেট পাওয়া যাবে, যার দাম আনুমানিক ৫/৬ হাজার টাকা থেকে শুরু হবে।
মডেম : এটি আইপি টেলিফোনের সঙ্গে গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে।
মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটার বা ল্যাপটপ : যেসব কম্পিউটার বা ল্যাপটপে হেডফোন কার্যকর করা যাবে।
ইন্টারনেট সংযোগ : আইএসপি প্রতিষ্ঠান থেকে সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
এছাড়া আইপি টেলিফোনি প্রযুক্তি সমৃদ্ধ মোবাইল সেট ব্যবহার করে এই সেবা পাওয়া যাবে, সেক্ষেত্রে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
যে ধরনের সেবা পাওয়া যাবে
আইপি টেলিফোনিতে দুই ধরনের সেবা পাওয়া যাবে। একটি হচ্ছে ভয়েস কল সার্ভিস। অন্যটি হচ্ছে ডেটা সার্ভিস। আইপি টেলিফোনি ব্যবহার করার জন্য প্রত্যেক গ্রাহককে দেয়া হবে আইডি নম্বর। বিভিন্ন আইএসপি কোম্পানির আইএসএন’র কোডগুলো যেমন বিডিকমের ০৯৬৬৬, ঢাকা কমের ০৯৬১১, লিংক থ্রির ০৯৬৭৮, অগ্নির ০৯৬০৬ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কোড ও গ্রাহক আইডি নম্বর মিলে পুরো আইডি হবে ১১ সংখ্যার। এই সেবা হ্যান্ডসেট, ফিক্সড সেট ও কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে। কম্পিউটারে ও ল্যাপটপে কথা বলা যাবে হেডফোনের সহায়তায়। আশা করা যায় খুব শিগগিরই এসব সুবিধা ব্যাপকভাবে পাওয়া যাবে।
খরচ কেমন হবে?
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে কথা বলা যাবে আইপি টেলিফোনি প্রযু্ক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। মূলত আইপি টেলিফোনি প্রযুক্তিতে বিনামূল্যে কথা বলা যাবে। শুরুতে একটি ফরম পূরণের মাধ্যমে নিবন্ধন ফি মাত্র ১০০ টাকা দিতে হবে। বিনিময়ে অফুরন্ত কথা বলা যাবে। এতে মোবাইল ফোন বা অন্য অপারেটরে কল করা যাবে সেক্ষেত্রে চার্জ যুক্ত হবে। এছাড়া দেশের বাইরে থাকা প্রায় ১ কোটি মানুষ কম খরচে কথা বলার সুযোগ পাবে। আইপি টেলিফোন থেকে আইপি টেলিফোনিতে কথা বলার ক্ষেত্রে কোনো খরচ আসবে না। তবে সরকারি ল্যান্ডফোন কর্তৃপক্ষ বিটিসিএলের সঙ্গে অচিরেই এ সংযোগ পাওয়া সম্ভব হবে। তবে আইপি টেলিফোন সেটের ইনস্টলেশনের জন্য কি চার্জ দিতে হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। এটি নির্ভর করবে সেট সংখ্যার উপরে।
অবৈধ ভিওআইপি রোধ হবে
আইপি টেলিফোনি বিস্তারের ফলে দেশে অবৈধভাবে ভিওআইপি ব্যবসা অনেকাংশেই রোধ হবে। কারণ, আইপি টেলিফোনি অত্যন্ত সাশ্রয়ী প্রযুক্তি। এটা চালু হলে অবৈধ ভিওআইপি কলের দিকে মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাবে। সারা বিশ্বে যোগাযোগ প্রযুক্তিতে যে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে তা থেকে দূরে থাকা মানে সার্বিক অগ্রসরতা থেকে পিছিয়ে পড়া। বিশ্বের অনেক দেশে আইপি টেলিফোনি দারুণভাবে জনপ্রিয়। এবার আমরা সে অগ্রযাত্রায় সামিল হতে যাচ্ছি। তবে এটা সম্ভব হবে কেবল আইপি টেলিফোনির যথার্থ প্রয়োগ ও ব্যবহারের ফলে। এখন দেখা যাক ফলাফল কী দাঁড়ায়।
এ নিয়ে লিখেছেন— সাদ আবদুল ওয়ালী
কি এই আইপি টেলিফোনি?
ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিফোনি সংক্ষেপে আইপি টেলিফোনি নামেই পরিচিত। টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে আইপি টেলিফোনি ইন্টারনেট প্রটোকল নির্ভর এমন এক ফোন সার্ভিস যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অত্যন্ত স্বল্প খরচে কথা বলার সেবা দিতে সক্ষম। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের মাধ্যমে এ সার্ভিস চালু হতে যাচ্ছে। এতে প্রত্যেক সার্ভিস প্রোভাইডার বা অপারেটরের একটি নিজস্ব কোড নম্বর থাকবে। এ সার্ভিস পেতে হলে একটি মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ থাকা বাধ্যতামূলক।
যেসব আইএসপি প্রতিষ্ঠান আইপি
টেলিফোনি সেবা দিচ্ছে
সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোক্তাদের দ্বারা এ সেবা শুরু হচ্ছে এটা খুবই আশার কথা। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার বা আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো আইপি টেলিফোনি সেবা প্রদান করতে যাচ্ছে। এ যাত্রায় সামিল হয়েছে মোট ১৮টি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে অ্যাডভান্সড ডেটা নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড, অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড, বিডিকম অনলাইন লিমিটেড, বেক্সিমকো, ব্রাকনেট, বিটিএস কমিউনিকেশনস লিমিটেড, কানেক্ট বিডি লিমিটেড, ঢাকা কম লিমিটেড, গ্রামীণ সাইবারনেট লিমিটেড, গ্লোবাল এক্সেস লিমিটেড, এইচআরসি টেকনোলজিস লিমিটেড, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ইননোভেটিভ অনলাইন লিমিটেড, লিংক থ্রি টেকনোলজিস লিমিটেড, মেট্রোনেট বিডি লিমিটেড, অপটিমাক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড, রয়াল গ্রিন অনলাইন লিমিটেড এবং টেলনেট কমিউনিকেশন লিমিটেড। উল্লেখ্য, গত বছর বিটিআরসি ৩২ টি আইএসপি প্রতিষ্ঠানকে এ সেবার জন্য অনুমতি দেয়। কিন্তু নানা কারণে এ সেবা এতদিনে চালু হয়নি। ১৮টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি ১৪টি প্রতিষ্ঠান অচিরেই এ কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানা গেছে।
আইপি টেলিফোনিতে যা যা লাগবে
এই প্রথম অনেকগুলো আইএসপি প্রতিষ্ঠান একইসঙ্গে আইপি টেলিফোনি সেবা প্রদান করছে। একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইপি টেলিফোনি কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে যেসব উপকরণ লাগবে তা হচ্ছে একটি আইপি টেলিফোন সেট— বাজারে এ ধরনের সেট পাওয়া যাবে, যার দাম আনুমানিক ৫/৬ হাজার টাকা থেকে শুরু হবে।
মডেম : এটি আইপি টেলিফোনের সঙ্গে গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে।
মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটার বা ল্যাপটপ : যেসব কম্পিউটার বা ল্যাপটপে হেডফোন কার্যকর করা যাবে।
ইন্টারনেট সংযোগ : আইএসপি প্রতিষ্ঠান থেকে সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
এছাড়া আইপি টেলিফোনি প্রযুক্তি সমৃদ্ধ মোবাইল সেট ব্যবহার করে এই সেবা পাওয়া যাবে, সেক্ষেত্রে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
যে ধরনের সেবা পাওয়া যাবে
আইপি টেলিফোনিতে দুই ধরনের সেবা পাওয়া যাবে। একটি হচ্ছে ভয়েস কল সার্ভিস। অন্যটি হচ্ছে ডেটা সার্ভিস। আইপি টেলিফোনি ব্যবহার করার জন্য প্রত্যেক গ্রাহককে দেয়া হবে আইডি নম্বর। বিভিন্ন আইএসপি কোম্পানির আইএসএন’র কোডগুলো যেমন বিডিকমের ০৯৬৬৬, ঢাকা কমের ০৯৬১১, লিংক থ্রির ০৯৬৭৮, অগ্নির ০৯৬০৬ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কোড ও গ্রাহক আইডি নম্বর মিলে পুরো আইডি হবে ১১ সংখ্যার। এই সেবা হ্যান্ডসেট, ফিক্সড সেট ও কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে। কম্পিউটারে ও ল্যাপটপে কথা বলা যাবে হেডফোনের সহায়তায়। আশা করা যায় খুব শিগগিরই এসব সুবিধা ব্যাপকভাবে পাওয়া যাবে।
খরচ কেমন হবে?
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে কথা বলা যাবে আইপি টেলিফোনি প্রযু্ক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। মূলত আইপি টেলিফোনি প্রযুক্তিতে বিনামূল্যে কথা বলা যাবে। শুরুতে একটি ফরম পূরণের মাধ্যমে নিবন্ধন ফি মাত্র ১০০ টাকা দিতে হবে। বিনিময়ে অফুরন্ত কথা বলা যাবে। এতে মোবাইল ফোন বা অন্য অপারেটরে কল করা যাবে সেক্ষেত্রে চার্জ যুক্ত হবে। এছাড়া দেশের বাইরে থাকা প্রায় ১ কোটি মানুষ কম খরচে কথা বলার সুযোগ পাবে। আইপি টেলিফোন থেকে আইপি টেলিফোনিতে কথা বলার ক্ষেত্রে কোনো খরচ আসবে না। তবে সরকারি ল্যান্ডফোন কর্তৃপক্ষ বিটিসিএলের সঙ্গে অচিরেই এ সংযোগ পাওয়া সম্ভব হবে। তবে আইপি টেলিফোন সেটের ইনস্টলেশনের জন্য কি চার্জ দিতে হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। এটি নির্ভর করবে সেট সংখ্যার উপরে।
অবৈধ ভিওআইপি রোধ হবে
আইপি টেলিফোনি বিস্তারের ফলে দেশে অবৈধভাবে ভিওআইপি ব্যবসা অনেকাংশেই রোধ হবে। কারণ, আইপি টেলিফোনি অত্যন্ত সাশ্রয়ী প্রযুক্তি। এটা চালু হলে অবৈধ ভিওআইপি কলের দিকে মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাবে। সারা বিশ্বে যোগাযোগ প্রযুক্তিতে যে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে তা থেকে দূরে থাকা মানে সার্বিক অগ্রসরতা থেকে পিছিয়ে পড়া। বিশ্বের অনেক দেশে আইপি টেলিফোনি দারুণভাবে জনপ্রিয়। এবার আমরা সে অগ্রযাত্রায় সামিল হতে যাচ্ছি। তবে এটা সম্ভব হবে কেবল আইপি টেলিফোনির যথার্থ প্রয়োগ ও ব্যবহারের ফলে। এখন দেখা যাক ফলাফল কী দাঁড়ায়।
No comments:
Post a Comment