দেখা আর না দেখার মাঝে
০০ মুনমুন কবির ০০
মডেল তুলনা
ছবি আশীষ সেনগুপ্ত
সম্পর্কের কত রকমেরই না সংজ্ঞা থাকতে পারে। বন্ধুত্বের কত ধরনেরই না আহ্বান হতে পারে। তবুও বন্ধু থাকে দেখা ও না দেখার মাঝেও। এক সময় পত্রমিতালির মাধ্যমে বহু বন্ধুত্ব হয়েছে। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও। আর এইখানটায় না দেখাটাই থাকে সব সময় বেশি। হয়তো দূরত্ব যখন কম থাকে বন্ধুর আবাসস্থল থেকে তখন মাঝে মাঝে দেখাও মেলে। বন্ধুত্ব এমনই এক আহ্বান, যেখানে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা দায়। হালে অনেকেই বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন প্রযুক্তির সানি্নধ্য নিয়ে। ফেইসবুক, ইয়াহু, মেসেঞ্জার কিংবা হাইফাইসহ বেশ কিছু মাধ্যমে প্রতিনিয়তই মানুষ জড়িয়ে যাচ্ছে বন্ধুত্ব নামক শব্দের সাথে। বর্তমানে দুনিয়াজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় বন্ধুত্বের মাধ্যম ফেইসবুক। এই মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিনই নতুন নতুন বন্ধুর সাথে গড়ে তুলছে নিজের বন্ধুত্ব। তবে মুশকিল হচ্ছে, এই বন্ধুত্ব বরাবরই হয়ে যাচ্ছে না দেখার মাঝে সীমাবদ্ধ। ফেইসবুকে অগণিত মিথ্যা অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অনেকে জানেই না যে, সে যার সাথে প্রতিদিন তথ্য আদান-প্রদান করছে সে আগাগোড়াই মিথ্যার মাঝে ডুবে আছে। অথচ ব্যক্তিগত বিষয় থেকে শুরু করে প্রেম, ভালোবাসা, এমনকি পরিবারের অনেক গোপন ও একান্ত বিষয়াবলিও শেয়ার করা হয় ফেইসবুক ফ্রেন্ডের সাথে। অন্যদিকে যদিও ফেইসবুকের অ্যাকাউন্টটি মিথ্যে না হয় তারপরেও অনেকটা বিশ্বাস করেই তার সাথে নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান করে যেতে হয়। এ কথা বললে বোধকরি অতু্যক্তি হবে না যে, এ ঘরনার বন্ধুদের সম্পর্কের খুব একটা টানা-পোড়েন ঘটে না। সব সময়ই একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে এরা কথার ফুলঝুরি ঘটিয়ে থাকে।
হাত বাড়ালেই বন্ধু হওয়া যায় না, আবার ইচ্ছে করলেই বন্ধু হওয়া যায় ফেইসবুকে। প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে শত শত বন্ধু রয়েছে। অথচ নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া খুব একটা কথা হয় না অন্যদের সাথে। এই দিনের পর দিন চ্যাট না করার পরেও বন্ধুত্বের তালিকায় ঐ সকল ব্যক্তি রাখা কেন, এমন প্রশ্নের উত্তর বোধকরি অনেক ফেইসবুক অ্যাকাউন্টধারীও বলতে পারবেন না। ফেইসবুক কিংবা অন্য যেসকল প্রযুক্তিনির্ভর ওয়েবসাইট ব্যবহার করে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা হচ্ছে এই বিষয়ে তরুণরাই অগ্রগামী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্রী বিথী বলেন, 'একজন নিয়মিত ফেইসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে আমার । অ্যাকাউন্টে থাকে ক্লাসমেট ও আত্মীয়স্বজনসহ আরও অনেকে, তাদের ছাড়া কারও সাথেই আমার দেখা হয় না। এমনও হয়েছে প্রত্যেক দিনই ফেইসবুকে কথা কিংবা চ্যাট হচ্ছে অথচ দেখা করার মাঝে এক ধরনের অনীহা থাকে। এক্ষেত্রে জেন্ডার সমস্যাও খুব প্রকট। সবকিছু মিলিয়ে না দেখা বন্ধুর সাথে দেখা, বন্ধুর তফাত অনেক। যদি বলি ফেইসবুকে বন্ধু সম্পর্কে যে ধারণা আমরা অনুধাবন করি তা অনেকটাই ধোঁয়াশার মাঝে নিমজ্জিত থাকে।' নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র সুজন বলেন, 'আমার অ্যাকাউন্টে সাতশ বন্ধু আছে, যার মধ্যে ছ'শ' বন্ধুকে আমি কখনই দেখেনি। বাকি একশ'জনের অর্ধেকের সাথে প্রায়ই দেখা হয়। আমি নিজেই জানি না, এদেরকে কেন আমি আমার বন্ধুত্বের তালিকায় রেখেছি। হয়তো এটা একটা স্ট্যাটাস ছাড়া কিছু নয়।' ভিকারুননেসা কলেজের তাসনিমা বলেন, 'আমি যাদের চিনি না অথবা জানি না তাদেরকে আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে রাখি না, কিন্তু আমার অনেক বন্ধুকেই দেখেছি তাদের অসংখ্য বন্ধু রয়েছে অ্যাকাউন্টে। কখনই দেখা হয় না তারপরও বন্ধু ব্যাপারটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।'
সামাজিক পরিচিতির এই প্রযুক্তির মাধ্যমগুলো ক্রমেশই মানুষকে না দেখা বন্ধুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যে বন্ধুকে ইচ্ছে করলেই দেখা যায় না শুধু অ্যাকাউন্টসের ছবিগুলো ছাড়া, তারপরও বন্ধু বলে কথা। সেলব্রেটিদের ফেইসবুকে অসংখ্য বন্ধু রয়েছে। তারা কখনই জানতেও চায় না, সে ছেলেটি কিংবা মেয়েটি কেমন আছে। এক সময় চিঠির প্রচলন থাকলেও তা এখন একপ্রকার বন্ধই হয়ে গেছে। জীবনের মধুরিমার অনেক স্বপ্নই অক্ষরে অক্ষরে লিপিবদ্ধ হতো। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বন্ধুও যেন ইন্টারনেটের মতে না দেখার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এটা কতটুকু সামাজিকতা অথবা মানসিক তৃপ্তি এনে দেয় তা অনেকটাই প্রশ্নসাপেক্ষ। দেখা আর না দেখা বন্ধুর খোঁজে তাইতো সময় কেটে যাচ্ছে তারুণ্যের অহর্নিশ প্রহর।
হাত বাড়ালেই বন্ধু হওয়া যায় না, আবার ইচ্ছে করলেই বন্ধু হওয়া যায় ফেইসবুকে। প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে শত শত বন্ধু রয়েছে। অথচ নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া খুব একটা কথা হয় না অন্যদের সাথে। এই দিনের পর দিন চ্যাট না করার পরেও বন্ধুত্বের তালিকায় ঐ সকল ব্যক্তি রাখা কেন, এমন প্রশ্নের উত্তর বোধকরি অনেক ফেইসবুক অ্যাকাউন্টধারীও বলতে পারবেন না। ফেইসবুক কিংবা অন্য যেসকল প্রযুক্তিনির্ভর ওয়েবসাইট ব্যবহার করে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা হচ্ছে এই বিষয়ে তরুণরাই অগ্রগামী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্রী বিথী বলেন, 'একজন নিয়মিত ফেইসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে আমার । অ্যাকাউন্টে থাকে ক্লাসমেট ও আত্মীয়স্বজনসহ আরও অনেকে, তাদের ছাড়া কারও সাথেই আমার দেখা হয় না। এমনও হয়েছে প্রত্যেক দিনই ফেইসবুকে কথা কিংবা চ্যাট হচ্ছে অথচ দেখা করার মাঝে এক ধরনের অনীহা থাকে। এক্ষেত্রে জেন্ডার সমস্যাও খুব প্রকট। সবকিছু মিলিয়ে না দেখা বন্ধুর সাথে দেখা, বন্ধুর তফাত অনেক। যদি বলি ফেইসবুকে বন্ধু সম্পর্কে যে ধারণা আমরা অনুধাবন করি তা অনেকটাই ধোঁয়াশার মাঝে নিমজ্জিত থাকে।' নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র সুজন বলেন, 'আমার অ্যাকাউন্টে সাতশ বন্ধু আছে, যার মধ্যে ছ'শ' বন্ধুকে আমি কখনই দেখেনি। বাকি একশ'জনের অর্ধেকের সাথে প্রায়ই দেখা হয়। আমি নিজেই জানি না, এদেরকে কেন আমি আমার বন্ধুত্বের তালিকায় রেখেছি। হয়তো এটা একটা স্ট্যাটাস ছাড়া কিছু নয়।' ভিকারুননেসা কলেজের তাসনিমা বলেন, 'আমি যাদের চিনি না অথবা জানি না তাদেরকে আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে রাখি না, কিন্তু আমার অনেক বন্ধুকেই দেখেছি তাদের অসংখ্য বন্ধু রয়েছে অ্যাকাউন্টে। কখনই দেখা হয় না তারপরও বন্ধু ব্যাপারটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।'
সামাজিক পরিচিতির এই প্রযুক্তির মাধ্যমগুলো ক্রমেশই মানুষকে না দেখা বন্ধুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যে বন্ধুকে ইচ্ছে করলেই দেখা যায় না শুধু অ্যাকাউন্টসের ছবিগুলো ছাড়া, তারপরও বন্ধু বলে কথা। সেলব্রেটিদের ফেইসবুকে অসংখ্য বন্ধু রয়েছে। তারা কখনই জানতেও চায় না, সে ছেলেটি কিংবা মেয়েটি কেমন আছে। এক সময় চিঠির প্রচলন থাকলেও তা এখন একপ্রকার বন্ধই হয়ে গেছে। জীবনের মধুরিমার অনেক স্বপ্নই অক্ষরে অক্ষরে লিপিবদ্ধ হতো। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বন্ধুও যেন ইন্টারনেটের মতে না দেখার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এটা কতটুকু সামাজিকতা অথবা মানসিক তৃপ্তি এনে দেয় তা অনেকটাই প্রশ্নসাপেক্ষ। দেখা আর না দেখা বন্ধুর খোঁজে তাইতো সময় কেটে যাচ্ছে তারুণ্যের অহর্নিশ প্রহর।
মডেল তুলনা
ছবি আশীষ সেনগুপ্ত
No comments:
Post a Comment