রোজায় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। এর প্রভাব পড়ে শরীরে। অনেকেই নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু কয়েকটি বিষয় জানা থাকলে এসব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। লিখেছেন ডা. মুজাহিদ আকাশ ভালো থাকার জন্য সুস্থতা জরুরি। প্রবাদ আছে, অসুস্থ মানুষ কোনো সুখ উপভোগ করতে পারে না। কিন্তু সুস্থ থাকা কি সহজ কাজ? আরো কঠিন হয় যদি উপায় জানা না থাকে। কারণ বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণ করতে হয়, আর সব খাবারই শরীরের ওপর কোনো না কোনো প্রভাব ফেলে। মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনে খাদ্য সম্পর্কে বিভিন্ন নির্দেশনা আছে। হাদিসে আছে অসুখ হওয়ার আগে ভালো খাবার খেয়ে প্রতিরোধের কথা। শুধু খাবারে নয়, দৈনন্দিন জীবনযাপনও যাতে স্বাস্থ্যপ্রদ হয়, সে বিষয়ে বলা আছে ধর্মগ্রন্থে।
অথচ মুসলমানরা বেশি পুষ্টিহীনতায় ভোগে। স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি, এ রকম অভ্যাসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির সংখ্যাও তাদের মধ্যে বেশি। বিশেষ করে এশিয়ার মুসলিম দেশগুলোতে। দ্য হেলথ সার্ভে অব ইংল্যান্ডের গবেষণা অনুযায়ী, এশিয়ার মুসলিম দেশগুলোতে গড়ে ২৪ শতাংশ লোক ধূমপান করে। বাংলাদেশে এই হার ৪০ শতাংশ।
একই জরিপে জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ডায়াবেটিসের হার অনেক বেশি। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার বিশ্বে অন্যান্য দেশের চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাত্র ২৮ শতাংশ লোক প্রয়োজনীয় পুষ্টিসম্পন্ন ফলমূল, শাকসবজি খায়, পাকিস্তানে এই হার ৩৩ শতাংশ।
ব্যালান্সড ডায়েট ও লাইফস্টাইলের মান বাড়াতে রমজান মাসের রোজা কাজে লাগতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটাই সত্য।
রোজা রাখার মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করার ইচ্ছাকে সংবরণ করা যায়। ফলে সেটি একটি ভালো অভ্যাসে পরিণত হয় এবং অপ্রয়োজনে বেশি করে খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
রোজায় শরীরে কী কী স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে
অনেকেই প্রশ্ন করেন, রোজার সময় না খেয়ে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, না ক্ষতিকর? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে জানা দরকার রোজা বা না খেয়ে থাকার সময়টাতে শরীরে কী কী পরিবর্তন ঘটে।
এই পরিবর্তন নির্ভর করে কতটা সময় না খেয়ে থাকা হলো তার ওপর। খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু শরীর অনশন (ফাস্টিং স্টেট) অবস্থায় যায় না। সর্বশেষ খাবার গ্রহণের মোটামুটি আট ঘণ্টা পর ফাস্টিং স্টেট শুরু হয়। অর্থাৎ খাবার গ্রহণের আট ঘণ্টা পর্যন্ত ওই খাবার শরীরে হজম হয়, তা থেকে শক্তি সঞ্চিত হতে থাকে। আট ঘণ্টা পর ওই খাবারের সরাসরি প্রভাব শরীরে থাকে না।
স্বাভাবিক সময়ে লিভার ও মাংসপেশিতে জমে থাকা গ্লুকোজ ভেঙে শক্তি উৎপন্ন হয়। এটাই শরীরের শক্তির প্রধান উৎস। রোজার সময় প্রথমে জমে থাকা গ্লুকোজ শক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। গ্লুকোজ শেষ হয়ে গেলে শরীরে জমে থাকা চর্বি ভেঙে শক্তি তৈরি হয়। আরো কিছু শারীরিক প্রক্রিয়ায় লিভারে সামান্য কিছু গ্লুকোজও এ সময় তৈরি হয় এবং তা থেকে শক্তি উৎপন্ন হয়।
যদি দীর্ঘ সময় (২৪ ঘণ্টার বেশি থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত_সাধারণত আমরণ অনশনকারীরা যেটা করেন) না খেয়ে থাকা হয়, তবে ধীরে ধীরে শরীরের প্রোটিন ভাঙতে শুরু করে। এভাবে না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে মাংসপেশি শুকিয়ে যেতে থাকে, শরীরে মারাত্দক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কোনোমতেই এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি অনশন স্বাস্থ্যকর নয়_স্বাস্থ্যহানিকর ও কখনো কখনো প্রাণঘাতী।
রোজায় যেহেতু সূর্যোদয় (সুবহে সাদিক) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়, তাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা ফাস্টিং বা অনশন স্টেটে থাকতে হয়। তাই সুবহে সাদিক ও ইফতারে যে খাবার গ্রহণ করা হয়, তা থেকেই শরীর প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ জোগাড় করতে পারে। সেহরিতে খাওয়া খাদ্যের গ্লুকোজ যখন আট ঘণ্টা পর শেষ হয়, তখন শরীরে সঞ্চিত চর্বি ভেঙে শক্তি তৈরি হয়। এ কারণেই রোজায় শরীরের ওজন খানিকটা কমে। মাংসপেশির প্রোটিন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। শরীরের বাড়তি এই চর্বি কমে যাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। একই সঙ্গে শরীরে ডিটক্সিফিকেশন ঘটে। ডিটক্সিফিকেশন অর্থ শরীরে জমে থাকা কিছু ক্ষতিকর পদার্থ বডি ফ্লুইডের সঙ্গে দ্রবীভূত হয়ে শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া।
কয়েক দিন রোজা পালনের পর রক্তে এনডোরফিনসের মতো কয়েকটি হরমোনের মাত্রা বাড়ে। এই হরমোনটি মানুষকে বেশি সচেতন করে, শরীর ও মনকে প্রফুল্ল রাখে।
রোজায় সেহরি ও ইফতারে পুষ্টিকর খাবার ও পানির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। শরীরের পানি ও খনিজ লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিডনি কাজ করে, বিশেষ করে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে। ঘামের মাধ্যমে যে লবণ বের হয়, তার বেশির ভাগই সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের যৌগ। তাই রোজার সময় যাতে অতিরিক্ত ঘাম হয়ে শরীরে লবণ ও পানির ঘাটতি না হয়, সে জন্য খাদ্যতালিকায় কিছু কার্বহাইড্রেট, চর্বি, লবণ ও পর্যাপ্ত তরল থাকতে হবে।
যে খাবারে উপকার, যে খাবারে ক্ষতি
রোজা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, যদি সঠিক খাদ্যতালিকা মেনে চলা যায়। খাদ্যতালিকা সঠিক না হলে বরং ক্ষতি হতে পারে। মনে রাখতে হবে, রোজা রাখা মানে কিন্তু শুধু না খেয়ে থাকা নয়; বরং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা রোজায় অর্জনের জন্য বিশেষভাবে বলা আছে।
রোজার সুফল পেতে হলে সঠিক খাবার পরিমিতভাবে খেতে হবে। কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার শরীর খারাপ করে, মনকে অস্থির রাখে; যা রোজার ধর্মীয় উদ্দেশ্যর একেবারে বিপরীত। পরিমাণে কম হলেও ব্যালান্সড ডায়েট বা পুষ্টিকর খাবার শরীর ঠিক রাখে। স্বাভাবিক সময়েও প্রত্যেকেরই বিজ্ঞানসম্মত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। তেমনিভাবে রোজায় খাবার অন্য সময়ের চেয়ে খুব বেশি আলাদা হওয়ার দরকার নেই। খাবারের ধরনের অভ্যাস পরিবর্তন হলে বরং তা স্বাস্থ্যে কিছু ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
রমজানের খাদ্যতালিকায় থাকবে মোট খাবারের তিন ভাগের এক ভাগ ফলমূল ও শাকসবজি। বাকি তিন ভাগের এক ভাগে রাখুন ভাত, রুটি, পাউরুটি, আলুর মতো কার্বহাইড্রেট-জাতীয় খাবার। এর সঙ্গে প্রোটিন হিসেবে রাখুন মাছ, মাংস, অল্প চর্বিযুক্ত খাবার, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার।
কার্বহাইড্রেট খাবার বাছাইয়ের সময় কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট রাখলে সারা দিন শরীরে শক্তি পাওয়া যায়। কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট ধীরে ধীরে দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি উৎপাদন করে। ঢেঁকিছাঁটা চাল, বাসমতি চাল, ওট, লাল আটা কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট-জাতীয় খাবার।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারও ধীরে ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় শক্তি সরবরাহ করতে পারে। যেমন_ছোলা-বুট, শিমের বীজ, খোসাসহ আলু, শাকসবজি ও প্রায় সব ধরনের ফলই ফাইবারসমৃদ্ধ।
তবে রোজার সময় বেশ কিছু খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়। দুঃখজনক হলো, এই খাবারগুলোই আমাদের দেশের মানুষ খেতে পছন্দ করে। যেমন_বেশি করে ভাজা খাবার (পিঁয়াজু, বেগুনি, পাকোরা, সিঙাড়া, সমুচা ইত্যাদি), ভুনা মাংস বা মাংসের ফ্রাই, বেশি তেলযুক্ত বা বেশি তেলে রান্না করা খাবার, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার (পেস্ট্রি), উচ্চমাত্রার চিনিযুক্ত খাবার (সব রকম মিষ্টি, জিলাপি), বেশি মসলাযুক্ত খাবার, রিফাইন্ড সুগারসমৃদ্ধ খাবার বা প্রসেস করা খাবার ও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (চা, কফি, কোলা)। ক্যাফেইনযুক্ত খাবারে ডাইইউরেটিকস থাকে বলে প্রস্রাবের পরিমাণ বেশি হয়, শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি রোজার সময় বের হয়ে যায়।
সেহরিতে খাবার খুব বেশি খেয়ে ফেলবেন না। সারা দিন শক্তি পাওয়ার জন্য বরং এই বেলার খাবারে কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার রাখুন। অন্যদিকে ইফতারে দ্রুত শক্তি দিতে পারে এমন খাবার খাওয়া উচিত। তাই খেজুর, ফলের জুস, চিনিযুক্ত লেবুর শরবত সবচেয়ে ভালো। খেজুর ভেঙে খুব সহজেই গ্লুকোজ উৎপন্ন হতে পারে বলে এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে পারে। এটি খাওয়া সুন্নতও। ইফতারে ভাজাপোড়াজাতীয় খাবার খেতে যতই মজা পাওয়া যাক না কেন, তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়।
এবার দেখা যাক কোরআন ও হাদিসে কোন ধরনের খাবার খেতে বলা হয়েছে এবং কিভাবে খেতে বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার, খেজুর, ভেড়া, দুম্বা, ছাগল ও উটের মাংস খেতেন। ইসলামে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে উল্লেখ করা আছে ফলমূল, শাকসবজি, অলিভ, পেঁয়াজ, শসা, আঙুর, খেজুর ও মাছের কথা।
ধর্ম ও খাদ্য
ইসলামে খাদ্যের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে খাবারের রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। কোরআনে বলা আছে, সেই খাবারগুলো খেতে হবে, যা হালাল করা হয়েছে এবং তা খেতে হবে পরিমিতভাবে। ইসলামে অতিভোজনকে নিরুৎসাহ করা হয়েছে।
মানুষ যে খাদ্য গ্রহণ করে, তা তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। খাবার তার আচরণ ও ব্যক্তিত্বেও প্রভাব ফেলে। পরিমিত ও পুষ্টিকর খাবার শরীর ও মনকে প্রফুল্ল রাখে। ইসলামে সুস্থতা বলতে সব সময়ই শরীর ও মন উভয়কেই সুস্থ রাখার কথা বলা হয়েছে।
তিরমিজি হাদিসে বর্ণিত আছে, আদম-সন্তানরা যেন জাহাজের মতো পেট ভরাট না করে। তার সেটুকুই খাওয়া উচিত, যা তার জীবনধারণের জন্য দরকার।
বলা হয়েছে পেটের তিন ভাগের এক ভাগ খাবার দিয়ে, এক ভাগ পানি দিয়ে পূর্ণ করতে এবং বাকি এক ভাগ খালি রাখতে।
রোজায় শারীরিক কিছু সমস্যা ও তার প্রতিকার
নিয়ম মেনে রোজা পালন করলে সাধারণত সমস্যা হয় না। তার পরও কিছু সমস্যা হতে পারে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে।
হার্টবার্ন বা বুকজ্বলা
পাকস্থলীতে সব সময় এসিড থাকে। এতে খাদ্য হজম হয় ও খাদ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। কিন্তু পাকস্থলীর গাত্রে থাকা বিশেষ পিচ্ছিল আবরণের জন্য এসিডের কারণে পাকস্থলী ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। তবে কোনো কারণে প্রয়োজনের অতিরিক্ত এসিড তৈরি হলে বা পাকস্থলীতে খাবার না থাকার সময় এসিড নিঃসরণ হলে অথবা পাকস্থলী থেকে এসিড ইসোফেগাসে (খাদ্যনালির অংশ) চলে এলে বুক জ্বলে। রোজার সময় এই হার্টবার্ন বা বুকজ্বলা সমস্যাটি অনেকের হয়।
সাধারণত রোজা রাখলে এসিড কম তৈরি হওয়ার কথা, কিন্তু ক্ষুধা পেলে ও খাবারের কথা চিন্তা করার কারণে কারো কারো এসিড নিঃসরণ বেড়ে যায়। তাঁদের হার্টবার্ন বা বুকজ্বলা সমস্যা বেশি হয়।
এ সমস্যায় অ্যান্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল ও ইসোমিপ্রাজল ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। সেহরি খাওয়ার সময় এ-জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
তবে ওষুধ খেয়ে হার্টবার্ন দূর করার চেয়ে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে করা বেশি ভালো। পরিহার করতে হবে তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া, বাসি ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার। তা ছাড়া ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে তা থেকে এই সময়টায় বিরত থাকতে হবে।
যাঁদের টক ঢেঁকুর আসে, বুক জ্বলে, তাঁরা শোয়ার সময় একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
রোজায় খাবার কম খাওয়া হয় বলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা। কিন্তু সেহরি ও ইফতারে অনিয়ন্ত্রিত খাওয়ার কারণে রক্তে সুগার বাড়তে পারে এবং দুপুরে না
খাওয়ায় সুগার হঠাৎ কমে যেতে পারে। আবার যাঁরা হেঁটে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেন, রোজার কারণে এ সময় তা সম্ভব হয় না।
মাথাব্যথা
রোজায় খুব কমন সমস্যা এটি। বেশ কিছু কারণে মাথাব্যথা হয়। বড় কারণ পানিশূন্যতা, ক্ষুধা, ঘুম ও রেস্ট কম হওয়া, চা-কফি পান না করা।
এ সমস্যাটি কম হবে, যদি সেহরি মিস না হয়, ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পানি ও তরল বেশি করে পান করা যায়। যাঁদের মাথাব্যথার সমস্যা রোজায় প্রতিদিনই হয়, তাঁরা সেহরিতে একটা প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেতে পারেন। রোদে সরাসরি যাবেন না, ছাতা ও সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শমতো রোজা রাখুন।
পানিশূন্যতা
রোজা রাখায় পানিশূন্যতা দেখা দেয়। সারা দিন ঘাম, প্রস্রাব ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রচুর পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়; কিন্তু রোজা রাখায় তা আর পূরণ করা সম্ভব হয় না। বয়স্কদের এ সমস্যা বেশি হয়। আবার যাঁরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ডাইইউরেটিকস ওষুধ সেবন করেন, তাঁদেরও হয়।
সেহরি ও ইফতারের মধ্যে রাতে পানি বেশি করে পান করুন। বারবার পান করুন। যাঁদের ওষুধ সেবনজনিত পানিশূন্যতা হয়, তাঁরা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কনস্টিপেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য
রোজায় বিরক্তিকর এ সমস্যাটি বেশি হয়। এর কারণ পানিশূন্যতা ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া। এ সময় বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। লাল আটা ও ঢেঁকিছাঁটা চাল খেতে পারলে উপকার পাবেন। তার পরও সমস্যা থাকলে ল্যাক্সেটিভ ওষুধ খেতে পারেন।
স্ট্রেস
খাবার ও পানি কম হওয়া, ঘুম ও বিশ্রাম কম হওয়া, জীবনযাপনের রুটিন পরিবর্তন হওয়ায় স্ট্রেস বা মানসিক চাপ বাড়ে। তাই রোজা শুরু হওয়ার একটু আগে থেকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে দুপুরের খাবার ও সকালের চা। চেষ্টা করুন রোজা শুরু হওয়ার আগেই এ দুটি খাবার না খেতে বা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে। সন্ধ্যার পর থেকে পানি বেশি খাওয়ার অভ্যাসটাও করে নিতে পারেন।
রোজার সময় রাতে উঠতে হয় বলে ঘুম কম হয়, বিকেলে ক্ষুধা বেশি লাগে বলে শরীর দুর্বল হয় ও বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। তাই সকালে একটু বেশি সময় ঘুমিয়ে নিন বা বিকেলে একটু রেস্ট নিন অথবা রাতে এক ঘণ্টা আগে ঘুমাতে যান।
তথ্য ও পরামর্শ সহায়তা
ড. এ এম এম মোকাররম হোসেন
অধ্যাপক, খাদ্য ও পুস্টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলা কবিতা বিষয়ে আমার ওয়েবসাইট ও ব্লগ সমূহের এড্রেস এবং অন্যান্য
-
আমার তৈরী করা বাংলা কবিতা বিষয়ে ওয়েবসাইট ও ব্লগ সমূহের এড্রেস নীচে দেয়া হল:
১) www.banglapoetry.xyz ২) http://mypoembd.blogspot.com ৩)
http://haikuall.b...
No comments:
Post a Comment