Search This Blog

TIP'S CETAGORY WITH LANGUAGE

Tips 4 pc

Update Software

Tuesday, October 12, 2010

প্লাস্টিক গাছ গাছালি : ঘরের সৌন্দর্যে

প্লাস্টিক গাছ গাছালি : ঘরের সৌন্দর্যে

এস চৌধুরী
‘আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা’—ছোটবেলার এই ঘুমপাড়ানি/ঘুম আওড়ানো ছড়ার বুলি শুনতে হতো দাদা-দাদি, বাবা-মায়ের কোলে বসে জানালার ফাঁক কিংবা বারান্দায় শুয়ে। তখনকার উন্মুক্ত প্রকৃতি আমাদের সত্যিই চাঁদের দিকে তাকিয়ে হাতছানি দেয়ার সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু আজকের এই সময়েও অনেক দাদা-দাদি, বাবা-মায়ের মুখে সে ছড়া থাকলেও নেই সে উন্মুক্ত প্রকৃতির হাতছানি, সেই জানালার ফাঁকে চাঁদ। চাঁদের পরিবর্তে রূপক হিসেবে আলোর কোনো এক উত্সকে কেন্দ্র করেই সেই ঘুমপাড়ানি ছড়া আজও প্রচলিত। আজ আমাদের কাছে সেই উন্মুক্ত প্রকৃতির চাঁদ কেবল ছায়া হিসেবেই আছে সেই স্বাদ ও রসে। ঠিক তেমনি আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রে প্রকৃতিকে আমরা ভুলতে পারিনি। আমরা আমাদের স্বপ্ন ও চিন্তনগুলোকে যেভাবে রূপ দিই জড়বস্তু হিসেবে, ঠিক তারই প্রয়াসে গাছ কিংবা বৃক্ষকেও আমরা আমাদের নন্দনশৈলীর মাধ্যমে এর রস ও স্বাদ যেন এর সশরীর অনুপস্থিতিতেও খুঁজে পাই। সেজন্য সৃষ্টি করেছি প্রাণহীন গাছ কিংবা প্লাস্টিক বৃক্ষের। পেইন্টিংস, মুক্ত শিল্পকর্ম, স্থাপত্য শিল্প—সবই আমাদের স্বপ্নের বাস্তব জড়বস্তুরূপ। তবু এর মধ্যেই আমরা খুঁজে পাই আমাদের প্রাণের অস্তিত্ব। তাই আমাদের প্রাণের গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকেই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা মাথায় রেখে আমরা আমাদের প্রাণের অস্তিত্বের প্রতি গাঢ় ভালোবাসা ও ভক্তি থেকে একে জড়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করতে আমাদের দ্বিধা লাগেনি। আমরা ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে প্রকৃতির লীলারসের কথা মাথায় রেখে এর ছায়ারূপ প্লাস্টিক শিল্পকে সাদরে গ্রহণ করে গাছকে আরও আপন করে নিয়েছি এর ফুল, ফল, লতাপাতার সমারোহে। এবার জেনে নেয়া যাক এর প্রসারতায়, এর শাখা-প্রশাখা কতটা বিস্তার লাভ করেছে গাছের রূপ-সৌন্দর্যে।
ফুল : বেলী, গোলাপ, কলি গোলাপ, হাজারি গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, লিলি, সূর্যমুখী, সূর্যতোড়া, জবা, অর্কিড, চেরি, মাইক, পেঁয়াজ, কচমচ, শাপলা।
এসব ফুল বিভিন্ন স্থানে উপযোগী করে স্থাপন করলে সৌন্দর্যেও ভিন্নমাত্রা পায়। কখনও টব, ওয়ালমেট, স্টিক, তোড়া, ঝার, ওয়ালসেট ও ট্রেতে ব্যবহার করা হয়।
দরদাম : ফুলের মান, সংখ্যা ও সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে এর দরদাম ওঠানামা করে। আনুমানিক যে সীমার মধ্যে দাম ওঠানামা করে, তা হলো ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
স্টিক ফুল : কদম, সূর্যমুখী, শাপলা, পপি, ষোল অর্কিড, বড়ই পাতা, গোলাপ জরি, নেট স্টিক, টিউলিপ, মাইক, হাজারি গোলাপ, জিনিয়া, কাঁঠালচাপা, চেরি, জরি চেরি, রজনীগন্ধা, সাপুড়া চেরি।
দরদাম : আনুমানিক এর সীমা হলো ৮০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। ফুলের মান, সংখ্যা ও আকারের ওপর ভিত্তি করে দরদাম ওঠানামা করে।
ফল : আঙুর, আপেল, নাশপাতি, কলা, কমলা, লিচু, কাঁচামরিচ, বাঙ্গি, টমেটো, স্ট্রবেরি, তরমুজ, কাঁঠাল, আম—এসব প্লাস্টিক ফল বাজারে সচরাচর পাওয়া যায়।
দরদাম : দরদামের আনুমানিক সীমা ৪০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে।
গাছ : ফুল-ফল কিংবা লতাপাতা, ডাল নিয়ে যেসব প্লাস্টিক গাছ পাওয়া যায় সেগুলো হলো—পাম্পি, বড়ই পাতা, বাঁশপাতা, পানপাতা, পাতাবাহার, সেঞ্চুরি, মানি প্ল্যান্ট, আম, কমলা, কচু, লিলি, গোলাপ, হাজারি গোলাপ ও অর্কিড।
দরদাম : সম্পূর্ণ গাছ বলে এর দাম কিছুটা চড়া। তবু তো সম্পূর্ণ একটি গাছ বলে কথা! আনুমানিক দামের সীমারেখা ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে।
লতাপাতা : লতাপাতাগুলো সাধারণত ঝুলন্ত হলে ভালো দেখায়। সেক্ষেত্রে যেসব লতাপাতা বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো হলো—সেঞ্চুরি, মানি প্ল্যান্ট, কচুপাতা, পানপাতা, সূর্যলতা, কলিলতা। এসব লতাপাতা কেউ কেউ আবার ওয়ালমেট হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।
দরদাম : আনুমানিক সীমারেখা ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। এর দাম ওঠানামা নির্ভর করে প্রধানত লতাপাতার মান ও আকারের ওপর।
ওয়ালমেট : বিভিন্ন ধরনের ফুল ও লতাপাতার ওয়ালমেট বাজারে পাওয়া যায়। দরদামের সীমারেখা হলো ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে।
ওয়ালমেট : বিভিন্ন ধরনের ফুলের সাজগোজে ভিন্ন ভিন্ন কারুকার্যের ওয়ালমেট পাওয়া যায়। এর মূল্যসীমা ২০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে। এছাড়া রয়েছে ফুলের ট্রে, স্ট্যান্ড, কর্নার।
ফুলের ট্রে : বিভিন্ন আকারের ট্রেতে রাখা বিভিন্ন ফুলের সমারোহ। এর মূল্যসীমা ২০০ থেকে ৫৫০ টাকার মধ্যে।
স্ট্যান্ড : ফুল, ফল, লতাপাতার টব স্ট্যান্ডের বিভিন্ন ভাঁজে ভাঁজে গুছিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন আকার ও গঠনের স্ট্যান্ড পাওয়া যায়। এসব স্ট্যান্ড সাধারণত নেট, কলস, মুরগি, বেত, কাঠ ও মাটির তৈরি হয় বিভিন্ন কারুকার্যমণ্ডিত। এসবের দাম ২০০ থেকে ১৫শ’ টাকার মধ্যে।
কর্নার : কর্নারগুলো বিভিন্ন ধাপে ধাপে বিভক্ত নানা কারুকার্য খচিত ছোট-বড় ভিন্ন ভিন্ন আকারের। প্রত্যেকটি ধাপে রয়েছে ফুল, ফল ও লতাপাতার টব কিংবা ট্রে রাখার পর্যাপ্ত স্থান। এসব কর্নার স্টিল, কাঠ কিংবা ফাইবারের হয়ে থাকে। দরদামের বাজারে এর মূল্যসীমা ৬০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন আকার ভেদে।
পরিচর্যা : প্লাস্টিক এসব গাছগাছালিতে পরিচর্যার ঝামেলাটা নেই বললেই চলে। শুধু ধুলাবালিমুক্ত রাখাটাই এর প্রধান পরিচর্যা। এর জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন ডাস্টার। ফুল, ফল, লতাপাতা এবং গাছকে সতেজ রাখার জন্য আপনি ডাস্টার দিয়ে ধুলামুক্ত করে ওয়াটার স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।
যোগাযোগ : আপনি আপনার পছন্দের প্লাস্টিক গাছগাছালির সন্ধান পেতে চাইলে যেতে পারেন ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায়। নিউ সুপার মার্কেটের গোলচত্বর, নিচতলায় গেলে আপনি দেখতে পাবেন প্লাস্টিক গাছগাছালির সমারোহ নিয়ে বসে আছে দোকান। প্রাণের ছায়াকে আপন করে নিন আপন ঘরে।

No comments:

Post a Comment

Tips Of All Sorts