সাইনোসাইটিস
ডা. সজল আশফাক
সাইনোসাইটিস দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি তীব্র ধরনের যাকে বলা হয় একিউট সানোসাইটিস অন্যটি কম তীব্র অথচ দীর্ঘমেয়াদি যাকে বলা হয় ক্রনিক সাইনোসাইটিস। সাইনাসের অভ্যন্তরীণ আবরণ হিসেবে থাকে এক ধরনের ঝিল্লি। এই ঝিল্লির প্রদাহকেই বলা হয় সাইনোসাইটিস। সাইনোসাইটিস সাধারণত ঠাণ্ডা ও ভেজা পরিবেশ, ধোঁয়া, ধুলোবালি ইত্যাদি পরিবেশ হিসেবে বিবেচিত।
সাইনাসের তীব্র প্রদাহ ৪ সপ্তাহের মধ্যে সেরে গেলে তাকে একিউট বা তীব্র ধরনের সাইনোসাইটিস বলা যেতে পারে। যদি এই ইনফেকশন ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ থাকে এবং এই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ সেরে যায় তাহলে তাকে বলা হয় সাব একিউট সাইনোসাইটিস। যদি সাইনোসাইটিসের উপসর্গ ১২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয় তখন তাকে বলা হয় ক্রনিক সাইনোসাইটিস। আবার বছরে ৪ বার করে সাইনাসের ইনফেকশন হয়ে মাঝখানের সময়টাকে সেরে গিয়ে সুস্থ হয়ে গেলে তাকে বলা হয় রিকারেন্ট একিউট সাইনোসাইটিস।
সাইনোসাইটিস কারণ
সাধারনত যে সব কারণে সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে—
নাকের ইনফেকনশন : নাকের মধ্যকার ঝিল্লিরই ধারাবাহিকতা গড়ায় সাইনাস পর্যন্ত। আর তাই নাকে কোনো ইনফেকশন হলে তা ঝিল্লির নিচে অবস্থিত লসিকাতন্ত্রের মাধ্যমে সাইনাসে চলে যায়। বেশিরভাগ সাইনোসাইটিস ভাইরাসজনিত ইনফেকশনের পর ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশনের জন্য হয়ে থাকে। যেসব ব্যাকটেরিয়া এর পেছনে দায় সেগুলো হলো স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া, হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, মেরাসেলা ক্যাটারালিস, স্ট্রেপটোকক্কাস পাইয়োজেনস, স্ফে অরিয়াস এবং ক্লেবসেলা নিউমোনিয়া ইত্যাদি।
সাঁতার : দূষিত পানি কিংবা উচ্চমাত্রার ক্লোরিনযুক্ত পানিতে গোসল করলে পানি সাইনাসে গিয়ে ইনফেকশন করতে পারে।
আঘাত : যে কোনো আঘাতের কারণে সাইনাস ছিদ্র হয়ে উন্মুক্ত হলে ইনফেকশন হতে পারে।
দাঁতের ইনফেকশন : মাঢ়ির একদম শেষ প্রান্তের দুটি দাঁত তুলে ফেলার সময় দাঁতের গোড়া দিয়ে সাইনাস উন্মুক্ত হয়ে পড়তে পারে এবং ইনফেকশন হতে পারে।
সরাসরি নয় তবে সাইনোসাইটিসের উদ্রেক করে এমন সব কারণের মধ্যে রয়েছে—
— নাক বন্ধ করে এবং নাকের নিঃসরণে বাধা দানকারী অবস্থার মধ্যে আছে—নাকের প্যাক, নাকের বাঁকা হাড়, নাকের মাংস ফুলে বড় হয়ে যাওয়া (হাইপারট্রফাইড ইনফিরিয়র টারবিনেট), নাকের পলিপ ইত্যাদি।
— নাকের নিঃসরণ নাকের মধ্যেই আটকে থাকতে পারে এমন অবস্থার মধ্যে আছে—সিসটিক ফাইব্রোসিস নামক রোগের কারণে নাকের ঘন নিঃসরণ, বড় এডিনয়েড, জন্মগতভাবে নাকের পেছনের ছিদ্রটি বন্ধ থাকা।
উপসর্গসমূহ
সাইনোসাইটিস একিউট কি ক্রনিক, অর্থাত্ তীব্র কি দীর্ঘমেয়াদি তা বোঝা যায় উপসর্গের তীব্রতর ওপর। তবে উভয় ক্ষেত্রেই একই ধরনের উপসর্গ লক্ষণীয়।
ষমাথাব্যথা : সাধারণত মাথাব্যথা হচ্ছে এই রোগের উপসর্গ। এই ব্যথা চোখের নিচে এবং কপালে থাকে। এছাড়া মুখমণ্ডল ও মাথার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যথা হতে পারে। কোনো সাইনাসে ইনফেকশন হয়েছে সে অনুযায়ী এই ব্যথার অঞ্চল পরিবর্তিত হয়। তবে ব্যথা নাকের গোড়ায়, উপরের চোয়ালের উপরে, চোখের নিচে, কপালে ও মাথার পেছন দিকে যে কোনো স্থানে হতে পারে।
ষফুলে যেতে পারে চোখের নিচের কিংবা উপরের অংশের পাতা। চিবুক কিছুটা লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে।
ষনাকের ভেতরের পুঁজ একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যাবে। নাকের ভেতরের মাংসগুলো ফোলা থাকতে পারে। নাকের হাড় বাঁকা থাকতে পারে। নাকের পেছনে নাসাগলবিল অঞ্চলে অর্থাত্ আলজিভের পেছন থেকে আঠালো ঘন পুঁজ বেয়ে নেমে যাচ্ছে—এমনটি দেখা যাবে।
ষশারীরিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে গা ম্যাজম্যাজেভাব, জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদি।
দরকার এক্স-রে
মাথার সাধারণ একটি এক্স-রে করেই সাইনোসাইটিস সম্পর্কে জানা যায়। তবে এক্স-রের ফলাফলের সঙ্গে প্রতিদিনের উপসর্গের মিল থাকতে হবে।
চিকিত্সা
সাইনোসাইটিসের চিকিত্সায় এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও নাকে বিশেষ ধরনের ড্রপ দিতে হয়। এন্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে হয়। ব্যথার জন্য দেয়া যেতে পারে ব্যথানাশক।
হঠাত্ তীব্র কিংবা ক্রনিক বা বার বার হওয়া সাইনোসাইটিস যাই হোক না কেন প্রথমে ওষুধ দিয়ে চিকিত্সা করতে হয়। ওষুধে না সারলে অপারেশনের মাধ্যমে চিকিত্সা করতে হয়। এক সময় এই সমস্যার জন্য সাইনাস ওয়াশ করা হতো। এখন যথাযথ এন্টিবায়োটিকের জন্য সাইনাস ওয়াশের প্রয়োজনীয়তা কমে এসেছে। এছাড়া প্রচলিত সাইনাসের অপারেশনের পরিবর্তে এন্ডোস্কোপিক সার্জারি খুব গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় কার্যকর ও রোগীর কম ভোগান্তির জন্য ফাংশনাল এন্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারি খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন সাইনোসাইটিস নিয়ে অযথা ভুগতে হয় না। তবে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিত্সা না নিলে হতে পারে বিভিন্ন জটিলতা। সুতরাং জটিলতা এড়াতে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাইনাসের তীব্র প্রদাহ ৪ সপ্তাহের মধ্যে সেরে গেলে তাকে একিউট বা তীব্র ধরনের সাইনোসাইটিস বলা যেতে পারে। যদি এই ইনফেকশন ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ থাকে এবং এই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ সেরে যায় তাহলে তাকে বলা হয় সাব একিউট সাইনোসাইটিস। যদি সাইনোসাইটিসের উপসর্গ ১২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয় তখন তাকে বলা হয় ক্রনিক সাইনোসাইটিস। আবার বছরে ৪ বার করে সাইনাসের ইনফেকশন হয়ে মাঝখানের সময়টাকে সেরে গিয়ে সুস্থ হয়ে গেলে তাকে বলা হয় রিকারেন্ট একিউট সাইনোসাইটিস।
সাইনোসাইটিস কারণ
সাধারনত যে সব কারণে সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে—
নাকের ইনফেকনশন : নাকের মধ্যকার ঝিল্লিরই ধারাবাহিকতা গড়ায় সাইনাস পর্যন্ত। আর তাই নাকে কোনো ইনফেকশন হলে তা ঝিল্লির নিচে অবস্থিত লসিকাতন্ত্রের মাধ্যমে সাইনাসে চলে যায়। বেশিরভাগ সাইনোসাইটিস ভাইরাসজনিত ইনফেকশনের পর ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশনের জন্য হয়ে থাকে। যেসব ব্যাকটেরিয়া এর পেছনে দায় সেগুলো হলো স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া, হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, মেরাসেলা ক্যাটারালিস, স্ট্রেপটোকক্কাস পাইয়োজেনস, স্ফে অরিয়াস এবং ক্লেবসেলা নিউমোনিয়া ইত্যাদি।
সাঁতার : দূষিত পানি কিংবা উচ্চমাত্রার ক্লোরিনযুক্ত পানিতে গোসল করলে পানি সাইনাসে গিয়ে ইনফেকশন করতে পারে।
আঘাত : যে কোনো আঘাতের কারণে সাইনাস ছিদ্র হয়ে উন্মুক্ত হলে ইনফেকশন হতে পারে।
দাঁতের ইনফেকশন : মাঢ়ির একদম শেষ প্রান্তের দুটি দাঁত তুলে ফেলার সময় দাঁতের গোড়া দিয়ে সাইনাস উন্মুক্ত হয়ে পড়তে পারে এবং ইনফেকশন হতে পারে।
সরাসরি নয় তবে সাইনোসাইটিসের উদ্রেক করে এমন সব কারণের মধ্যে রয়েছে—
— নাক বন্ধ করে এবং নাকের নিঃসরণে বাধা দানকারী অবস্থার মধ্যে আছে—নাকের প্যাক, নাকের বাঁকা হাড়, নাকের মাংস ফুলে বড় হয়ে যাওয়া (হাইপারট্রফাইড ইনফিরিয়র টারবিনেট), নাকের পলিপ ইত্যাদি।
— নাকের নিঃসরণ নাকের মধ্যেই আটকে থাকতে পারে এমন অবস্থার মধ্যে আছে—সিসটিক ফাইব্রোসিস নামক রোগের কারণে নাকের ঘন নিঃসরণ, বড় এডিনয়েড, জন্মগতভাবে নাকের পেছনের ছিদ্রটি বন্ধ থাকা।
উপসর্গসমূহ
সাইনোসাইটিস একিউট কি ক্রনিক, অর্থাত্ তীব্র কি দীর্ঘমেয়াদি তা বোঝা যায় উপসর্গের তীব্রতর ওপর। তবে উভয় ক্ষেত্রেই একই ধরনের উপসর্গ লক্ষণীয়।
ষমাথাব্যথা : সাধারণত মাথাব্যথা হচ্ছে এই রোগের উপসর্গ। এই ব্যথা চোখের নিচে এবং কপালে থাকে। এছাড়া মুখমণ্ডল ও মাথার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যথা হতে পারে। কোনো সাইনাসে ইনফেকশন হয়েছে সে অনুযায়ী এই ব্যথার অঞ্চল পরিবর্তিত হয়। তবে ব্যথা নাকের গোড়ায়, উপরের চোয়ালের উপরে, চোখের নিচে, কপালে ও মাথার পেছন দিকে যে কোনো স্থানে হতে পারে।
ষফুলে যেতে পারে চোখের নিচের কিংবা উপরের অংশের পাতা। চিবুক কিছুটা লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে।
ষনাকের ভেতরের পুঁজ একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যাবে। নাকের ভেতরের মাংসগুলো ফোলা থাকতে পারে। নাকের হাড় বাঁকা থাকতে পারে। নাকের পেছনে নাসাগলবিল অঞ্চলে অর্থাত্ আলজিভের পেছন থেকে আঠালো ঘন পুঁজ বেয়ে নেমে যাচ্ছে—এমনটি দেখা যাবে।
ষশারীরিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে গা ম্যাজম্যাজেভাব, জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদি।
দরকার এক্স-রে
মাথার সাধারণ একটি এক্স-রে করেই সাইনোসাইটিস সম্পর্কে জানা যায়। তবে এক্স-রের ফলাফলের সঙ্গে প্রতিদিনের উপসর্গের মিল থাকতে হবে।
চিকিত্সা
সাইনোসাইটিসের চিকিত্সায় এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও নাকে বিশেষ ধরনের ড্রপ দিতে হয়। এন্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে হয়। ব্যথার জন্য দেয়া যেতে পারে ব্যথানাশক।
হঠাত্ তীব্র কিংবা ক্রনিক বা বার বার হওয়া সাইনোসাইটিস যাই হোক না কেন প্রথমে ওষুধ দিয়ে চিকিত্সা করতে হয়। ওষুধে না সারলে অপারেশনের মাধ্যমে চিকিত্সা করতে হয়। এক সময় এই সমস্যার জন্য সাইনাস ওয়াশ করা হতো। এখন যথাযথ এন্টিবায়োটিকের জন্য সাইনাস ওয়াশের প্রয়োজনীয়তা কমে এসেছে। এছাড়া প্রচলিত সাইনাসের অপারেশনের পরিবর্তে এন্ডোস্কোপিক সার্জারি খুব গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় কার্যকর ও রোগীর কম ভোগান্তির জন্য ফাংশনাল এন্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জারি খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন সাইনোসাইটিস নিয়ে অযথা ভুগতে হয় না। তবে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিত্সা না নিলে হতে পারে বিভিন্ন জটিলতা। সুতরাং জটিলতা এড়াতে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক
নাক কান গলা বিভাগ
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
All Tips: Computer Tips, Internet Tips, Printing Tips, Health Tips, Life Tips, Household Tips, Career Tips, Earn By Internet, Phone Tips, Photography Tips, Fashion Tips, Hair Tips, Summer Tips, Travel Tips, Winter Tips etc.
All Blog: All Travel Way, Recipe BD, All Health BD, Dhaka All, Bangla Poetry, Bird sanctuary bd, Wallpaper All Free, Free Treatment Bd etc.
All Blog: All Travel Way, Recipe BD, All Health BD, Dhaka All, Bangla Poetry, Bird sanctuary bd, Wallpaper All Free, Free Treatment Bd etc.
No comments:
Post a Comment