Search This Blog

TIP'S CETAGORY WITH LANGUAGE

Tips 4 pc

Update Software

Tuesday, September 21, 2010

কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায়

কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায়

ড. আবুল হাসনাত
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ এবং প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার মানুষ মারা যায় কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে। দেশে প্রতি ২৫ লাখ মানুষের জন্য রয়েছে একজন করে কিডনি বিশেষজ্ঞ। কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে বেঁচে থাকার দুটি উপায়—ডায়ালাইসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপন। এ চিকিত্সা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং সুযোগও সীমিত। এ কারণে অধিকাংশই এ রোগের চিকিত্সা করাতে ব্যর্থ হয়। সারা দেশে সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে হেমোডায়ালাইসিস যন্ত্র আছে সাড়ে পাঁচশ’র কিছু বেশি, যা দিয়ে সর্বসাকুল্যে তিন হাজার রোগীর ডায়ালাইসিস করা সম্ভব। কিডনি বিকল হওয়া রোগীদের বাঁচিয়ে রাখার অপর বিকল্প হচ্ছে কিডনি প্রতিস্থাপন বা ট্রান্সপ্লান্ট। প্রতিস্থাপন আরও ব্যয়বহুল। সাধারণত রোগীর আত্মীয়-স্বজন এ অবস্থায় কিডনি দান করে থাকেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে এক লাখ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ আট লাখ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে।
কিডনি রোগের উপসর্গ : কিডনি রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, প্রথম দিকে এ রোগের কোনো উপসর্গ থাকে না। কিন্তু যখন উপসর্গ ধরা পড়ে ততক্ষণে কিডনির প্রায় ৮০ ভাগই বিকল হয়ে পড়ে। এরপর আর তেমন কিছু করার থাকে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি বিকল হওয়ার কারণ তিনটি—নেফ্রাইটিস (ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, ভাইরাসজনিত হেপাটাইটিস, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ভেজাল খাবার ইত্যাদি), ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ। চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থাকলে তার কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি। বংশগত কারণেও কিডনি রোগ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, রক্তস্বল্পতা, অল্পতে হাঁফিয়ে যাওয়া, ঘুম না হওয়া ইত্যাদি কিডনি রোগের উপসর্গ। স্মর্তব্য, ঘোলাটে দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব অথবা কোমরের পেছনের দিকে ব্যথা করলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায় : আমাদের সবারই প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা প্রয়োজন। যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি, তাই এ রোগ দুটি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। খাবার লবণ কম খাওয়াই বাঞ্ছনীয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত ব্যথানাশক (Pain killer) হিসেবে প্যারাসিটামল বা এসপিরিন খেয়ে থাকেন যা কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তবে যদি কোনো রোগের জন্য এ ধরনের ওষুধ নিয়মিত নেয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয়। স্বাস্থ্য সচেতনতা তথা কিডনি রোগ সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সবাইকে বছরে অন্তত একবার সিরাম ক্রিয়েটিনিন এবং প্রস্রাবে এলবুমিন নির্গতের পরিমাণ পরীক্ষা করা উচিত। প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ ধরা পড়লে ওষুধের মাধ্যমে তা সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এছাড়া কিডনি রোগের চিকিত্সা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আরও ক্লিনিক ও হাসপাতাল স্থাপন করা অতীব জরুরি।
লেখক : অধ্যাপক
ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল : ahasnat99@yahoo.com

No comments:

Post a Comment

Tips Of All Sorts