Search This Blog

TIP'S CETAGORY WITH LANGUAGE

Tips 4 pc

Update Software

Saturday, September 4, 2010

ঈদে পরিপাটি ঘর দুয়ার

ঈদে পরিপাটি ঘর দুয়ার

সোহরাব আলম
ঈদের আগমন আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে অনেকের। এবার শুধু ঈদ উদযাপনের পালা। কবি নজরুলের গানের মতো করেই সবার মধ্যে সুর ধ্বনিত হচ্ছে— ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।’
ঈদ উপলক্ষে নিজেকে গুছানোর পর্ব ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন কেউ কেউ। অর্থাত্ পোশাক-আশাক, গয়না-গাটি থেকে শুরু করে জুতা-মোজাসহ অন্যান্য সাজসজ্জার সরঞ্জাম কেনা—সে তো আগেই শেষ। চাঁদ রাত পর্যন্তও হয়তো কেউ কেউ কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকবেন। কিন্তু সাজসজ্জার অন্য দিকটা কি বাদ পড়ে গেল? ভেবে দেখুন তো ঈদ উদ্যাপনে এত যে আয়োজন এতে আপনার ঘরবাড়ির সাজের ব্যাপারটি আছে কিনা! অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ, ফুরফুরে মেজাজে ঈদ করতে চাইলে তো ঘর-বাড়ি পরিপাটি থাকতেই হবে। ঈদের দিন এবং এর আগে ও পরে অতিথির আগমনও তো ঈদ উদ্যাপনেরই একটা অংশ। তাহলে কী করা উচিত ঘর-বাড়ি পরিপাটি করে সাজাতে। সাজটাইবা কেমন হবে?
বসার ঘর : বসার ঘর বা ড্রয়িং রুমটা সাজাতে হবে পুরোপুরি অতিথিদের কথা মাথায় রেখে। যাতে যে কোনো অতিথি ঘরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মুগ্ধ হয়ে যায়। যেহেতু ঈদ, মোটিফটাতে যেন পবিত্র ও স্নিগ্ধ ভাব থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সোফা নতুন বা পুরনো যাই হোক না কেন তা যেন থাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সোফার কভার যে কোনো লাইট কালারের হলেই উত্সবের ভাবটা বেশি ফুটে উঠবে বলে জানালেন একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কুশন কভার যে কোনো অতিথির মুগ্ধতা বাড়িয়ে দিতে পারে। সম্ভব হলে ঈদের জন্য নতুন স্পেশাল কোনো কুশন কভার ব্যবহার করতে পারেন। কুশন কভারের নকশা যদি হয় চাঁদ-তারা বা লতাপাতায় সজ্জিত তাহলে খুবই ভালো লাগবে। দেয়ালের রং যদি ফ্যাকাশে হয়ে থাকে তাহলে এ উপলক্ষে নতুন করে রং করিয়ে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে লাইট কালারকেই গুরুত্ব দিন। চাইলে দেয়ালে নকশাও করিয়ে নিতে পারেন। অলঙ্কৃত টবে সবুজ গাছ যদি ঘরের চারকোনায় রাখেন তাহলে তা অন্য রকম আবেদন সৃষ্টি করবে। ঘরের টিভি সেট বা বুকশেলফটি বসার ঘরের কোনো একদিকে স্থান দিলে নিশ্চয়ই আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলবে। অবশ্য বসার ঘরের আয়তন যদি ছোট হয় তাহলে অতিরিক্ত জিনিসে ভরিয়ে না ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ভালো কোনো সুগন্ধি কিংবা বড় একটি ফুলের তোড়া টেবিলে রেখে দিতে পারেন তা একদিকে যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে তেমনি পবিত্র ভাবটাও ফুটিয়ে তুলবে। আলোর ব্যবহারও বিরাট ভূমিকা রাখবে। ল্যাম্পশ্যাড ব্যবহার করে যে কোনো ড্রয়িং রুমেরই চেহারা পাল্টে দেয়া যায়। দেয়াল ও পর্দার রং বিবেচনা করে ঠিক করুন কোন রংয়ের আলো বা ল্যাম্পশ্যাড ব্যবহার করবেন। তবে বসার ঘর অর্থাত্ ড্রয়িংরুমের জন্য বড় ও ত্রিভূজ আকারের ল্যাম্প ব্যবহার করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। দুই থেকে আড়াই ফুট উচ্চতার কারুকার্যময় ল্যাম্পশ্যাডের ব্যবহারে ঘরে এক দৃষ্টিনন্দন ও মায়াময় আবহ ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। ঘরের কোনায় দৃষ্টিনন্দন শোপিসও ব্যবহার করতে পারেন।
খাবার ঘর : ঈদে অতিথি আপ্যায়ন মানেই মজাদার সব খাবারের সমারোহ। সবাই চায় এই দিন উন্নতমানের খাবারকে দৃষ্টিনন্দনভাবে অতিথির সামনে উপস্থাপন করতে। কিন্তু শুধু কি সুস্বাদু খাবার দৃষ্টিনন্দনভাবে উপস্থাপন করলেই চলবে! খাবার ঘরটাও হতে হবে চমত্কার সাজে সজ্জিত। আর এজন্য দরকার সুন্দর পরিকল্পনা। প্রথমেই আসা যাক খাবার টেবিলের প্রসঙ্গে। এমনিতেই ডাইনিং টেবিল হয় একটু বড় সাইজের। ঈদে যেহেতু অনেক অতিথি আগমনের ব্যাপার থাকে তাই এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে বড় সাইজের টেবিলের ব্যবস্থা করুন। খেয়াল রাখতে হবে টেবিলটির অবস্থান যেন হয় ঘরের মাঝখানে। প্রচুর আলো-বাতাসযুক্ত ঘরে খাবার পরিবেশন করাই উত্তম। ঘরের পর্দার ক্ষেত্রে হালকা রংকেই প্রাধান্য দিন। এতে একটা স্নিগ্ধ ভাব ফুটে উঠবে। দেয়ালের কাছাকাছি স্থানে লাইটশ্যাড ব্যবহার করলে স্নিগ্ধতা আরও বেড়ে যাবে। চমত্কার নকশার টেবিলম্যাট ব্যবহারে অতিথির মনোরঞ্জন হতে পারে। বেছে নিতে পারেন পছন্দসই টেবিলম্যাট। গ্লাসস্ট্যান্ড, টিস্যু পেপার বক্স ইত্যাদি রাখতে হবে টেবিলের মাঝামাঝি স্থানে। ঘরের একপাশে বড় একটা আয়না রাখলে ঘরটাকে বড় দেখাবে। সম্ভব হলে দু’একটি গাছের টবও রাখতে পারেন। এতে প্রাকৃতিক ভাবটা পাওয়া যাবে।
শোবার ঘর : শোবার ঘরে যদিও অতিথিদের আগমনের কোনো ব্যাপার নেই—তারপরও ঈদ উপলক্ষে আপনার নিজের ভালো লাগা ও মানসিক প্রশান্তির জন্যই সুন্দরভাবে সাজাতে পারেন। শোবার ঘরের বিছানার চাদর, বালিশ কভার, পর্দা সবই হতে পারে উজ্জ্বল রংয়ের। তাজা ফুলের আবেদনই আলাদা। সেজন্য গোলাপ, রজনীগন্ধার মতো ফুলকে প্রাধান্য দিন। ফুলের সৌরভ আর সৌন্দর্য মিলে এক অন্য রকম ভালো লাগার সৃষ্টি করবে। ড্রেসিং টেবিলে দুই পাশে দুটি ছোট ফুলদানি রেখে দেখতে পারেন। ঘরের চেহারাটাই পাল্টে যাবে।
রান্না ঘর : রান্না ঘরের সাজগোজের ব্যাপারটিতে প্রথমেই আসে এর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা। নজর রাখতে হবে এদিকটায়। সাজানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে দামি ও কম দরকারি জিনিসগুলো রাখুন কিচেন রেকের উপরের দিকটায়। কাচ, মেলামাইন, মাটি, অ্যালুমেনিয়াম ইত্যাদি বাসন-কোশন ও কাপ-পিরিচ চামচ আলাদা আলাদা স্থানে রাখুন। এতে এলোমেলো বা ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকবে না। রান্না ঘরের এক পাশে রাখতে পারেন কিছু শোপিসও। সর্বোপরি আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখাটা সবচেয়ে জরুরি।
অন্যান্য : ঘরের সাজ বা অতিথি আপ্যায়নে কাজে লাগবে এমন জিনিস যদি কিনতে চান তা কিনে ফেলুন আগেই। কারণ, ঈদ আসতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কুশন কভার, পর্দা, বিছানার চাদর, বালিশ কভার ইত্যাদি যদি নতুন ব্যবহার না করেন তাহলে পুরনোগুলোই ধুয়েমুছে আয়রন করে রাখুন। ঘর সাজাতে শোপিসের কদর অনেক। তাই ঈদ উপলক্ষে কিনতে পারেন নতুন শোপিস।

No comments:

Post a Comment

Tips Of All Sorts